top of page

ছবি

সেলফ পোর্ট্রেট

এই ছবিগুলা আমার আর আমার বাবার। 

 

ক্লাস ফাইভে শেষ করে যখন সিক্সে উঠবো, তখন আমার বাবা মারা যান। একজন মানুষের চলে যাওয়ার শোক কাটিয়ে ওঠার জন্য সাধারণত যা যা করা হয়, আমাদের বাসায়ও তা করা হল। তাঁর ব্যাবহার করা সব জিনিশ চলে গেল আলিশান বক্স-বিছানার নিচে। ছবি ভিডিও গেল স্টোর রুমের কোনায়। কৌশল কাজ হলো। খুব জলদি প্রাথমিক ধাক্কা সামলে, বেশ সহজেই ভুলে যাওয়া শুরু করলাম তার গায়ের রং, গলার স্বর, চেহারা।

 

সেজন্যই হয়ত যখন বছর দশেক পর একগাদা পুরাতন জামাকাপড়ের সাথে সুন্দর ফ্রেমে বাঁধানো স্যুট টাই পরা তাঁর একটা পোর্ট্রেট পাওয়া গেল - আমি বেশ অবাক হয়ে টের পেলাম, আমার জন্য কি গভীর একটা শূন্যতা অপেক্ষা করছে। প্রথমবারের মত খুব খুব খুব চেষ্টা করলাম তার কথা মনে করার। সেইভাবে কিছুই এলো না। ফলাফল আর্যভট্টের ডাবল জিরো । 

 

এই অতৃপ্তিবোধ সেদিন থেকে শুরু করে আজকে পর্যন্ত সাথে নিয়ে ঘুরতেছি। যখন শূন্যতা বেশিরকম পাখা মেলে, তখন আমার নিজের শরীর দিয়ে তৈরি তাঁর সেই পোর্ট্রেটের রিক্রিয়েশন নিয়ে বসি। 

 

তৈরি হয় পোর্ট্রেট। কখনও আমার, কখনও বাবার।

 

আমার অন্যান্য আরও অনেক ছবিতে এই ভুলে যাওয়ার কষ্ট, পুরাতন কে বিদায় বলার অনিচ্ছা আর নতুনকে একরকম প্রত্যাখ্যান করার ব্যাপার বার বার ফিরে আসে। আমার ধারণা, আর্ট বানানোর অভ্যাসের পুরোটাই কোন এক জায়গায় গিয়ে এই বাবা’র রেখে যাওয়া শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টার সাথে জড়িত।

bottom of page